কেমন বাংলাদেশ চাই?
মোজাফফর হোসেন ভূঁইয়া:
|
আমাকে বাংলাদেশ স্বম্পর্কে কোন প্রশ্ন করো না। আজ যে বাংলার চিত্র আমার সামনে সে বাংলা আমি চাই না। আজ আমার বাংলা সমাজের শকুনের হাতে লাঞ্চিত। আমার এই বাংলার মাঠি, সবুজের সমারোহ, মানুষের স্বপ্ন, সকল সততা ভূলন্ঠিত কারো করোনা প্রত্যাশি। আমার সতীর্ততা যারা কেড়ে নিয়েছে আমাদের সম্মান আমরা আজ তাদের ঘরনি। এখন তারা পালাক্রমে আমাকে লাঞ্চিত করে আর আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। আমার শ্লীলতা হানি করেছিল পাকিস্থান, করেছে ভারত আর এখন আমাদের উপর চড়াও হয়ে ঘোমটা খোলছে আমিরিকা, পাকিস্থান পুরুনো রুপে। এরা সবাই বন্ধু সেজে হাত বাড়ায় আর ইজ্জত কেড়ে নিয়ে অট্ট হাসি হাসে। এদের সাথে হাত মিলায় আমাদের কিছু দেশদ্রোহী যারা বুদ্ধিজীবি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকে। তাদের জিহ্বার লালার গন্ধে আজ সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা আত্মনির্ভরশীলতা কবে অর্জন করবো? আমরা জ্ঞান বিজ্ঞানে কবে নিজেরা তুলে ধরবো বিশে^র মাঝে? এখন পর্যন্ত আমাদের এই সোনার বাংলা কোন নির্দিষ্ট সেক্টরে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারেনি। রাজনীতি অর্থনীতি, শিক্ষা, যোগাযোগ এমন কি মনুষ্যত্ব বিকাশে আমরা পরাজিত। আমরা কি এমন পরাজিত বাংলাদেশ চাই?
আমরা চাই সব কিছুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ নতুন এক বাংলা। যেখানে রাজনীতিতে থাকবে স্বকীয়তা, অর্থনীতি হবে স্বয়ং সম্পূর্ন। জীবন যাপন হবে স্বাধীন ও জবাবদিহিতিায় এক অনন্য অসাধারন জীবন মানের। আমরা উন্নত হবো কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব? আমরা কি আমাদের মনের ভাব স্বাধীন ভাবে প্রকাশ করতে পারি? আমার কোন কথা যদি আপনার পচন্দ না হয় বা তা যদি গ্রহনযোগ্যও না হয় তবে কি আমি আমার ভাব প্রকাশ করতে পারবো? নাকি সব সময়কার মতো এখনো আমার গলা টিপে ধরবেন নাকি আমাকে জেলে আটকিয়ে রাখবেন নাকি আমাকে আততায়ীদের মাধ্যমে হত্যা করবেন? এমন সব ঘটনা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। আমাদের দেশে স্বাধীনতার সময় বুদ্ধিজীবি হত্যা হয়েছে এবং তার পরবর্তিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতবাদের লোকদের বাকরুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন পন্থা বা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এ ধরনের হীনতায় অনেক মানুষ বুদ্ধিজীবি, সুশীল সমাজের নাগরিক বৃন্দ জীবন হারিয়েছেন। কোন জীবন নেয়ার কোন ক্ষমতাই আপনার নেই যতক্ষন না আপনি জীবন দান করতে পারবেন। কিন্তু আপনি এমন এক আদর্শ স্থাপন করছেন যেখানে অনুসারীগন আপনার ইশারায় অন্যকে আঘাত করতে দ্বিধান্বিত হয়না। এই ধরনের আদর্শ থেকে নিজেদের বিচ্ছুত করুন । এর দায়ভার আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না। এই পাপ আপনাকে হীন জীবন দান করতে পারে। আমরা কি মানবাধিকার পেয়েছি? আমরা কি আমাদের জীবন মানকে উন্নত করতে পেরেছি? আমরা কি শিক্ষা খাদ্য বস্র, বাসস্থান পেয়েছি? না আমরা আজো তা নিশ্চিত ভাবে পাইনি। এখনো মানুষ দুমুটো ভাতের জন্য ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে নিতে বাধ্য হয়েছে। এখনো মজুরের পারিশ্রমিকের জন্য রাস্তা অবরুধ করতে হচ্ছে। এখনো সুচিকিৎসার অভাবে মানুষ অকালে মরতে হচ্ছে। এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই বই, নেই যোগ্য শিক্ষক, নেই পাঠকক্ষ। আমরা আজো আমাদের অধিকার আদায়ে ছুটছি। রাজনীতির হীনতা আজ আমাদের সকল স্থানে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছে। আমরা কি পুরুনো চেতনা তৈরি করতে পেরেছি বা করার প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছি? আসলে আমরা তেমন কোন অগ্রগতির প্রতি সামনে এগুতে পারিনি। কারন আমরা নিজেদের তালাবদ্ধ করে রাখতে পছন্দ করি। দেশের সবচেয়ে বড় বড় দুটি বিশ^বিদ্যালয়ে সংগবদ্ধ দল দুজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এখানে সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ থেকে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা আমাদের বাকরুদ্ধ করেছে, স্তম্ভিত করেছে। আমরা এ বাংলায় এমন করুণ কোন ইতিহাস দেখতে আমাদের বড় করেনি। মানবতার এমন মৃত্যু, মনুষ্যত্বের এই করুন পরিণতি আমাদের জীবনকে দুর্ঃবিসহ করে তুলেছে। আমরা এমন বাংলা চাই নি যেখানে পুলিশ কোন আতংকিত নাম বা উপাধি বলে মনে হবে। আমরা সহানুভতির কোন এক সুন্দর বাংলা চাই। আমরা চাই শত্রু-মিত্র সকলের সহাবস্থান । আমরা সব কিছু ভাগ করে নিতে চাই নতুন রুপে। আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছি যে বাংলা অদ্যবদি আমাদের মৌলিক চাহিদার নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আমরা আজো সংগ্রাম করি খাদ্য, বস্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য। এই অনিশ্চিত জীবনে আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ঘুম থেকে উঠি আবার একই রুপে দিন শেষে ঘুমাতে যাই। সময় তার আপন মহিমায় অতিবাহিত হয় কিন্তু নিরাপত্তা বিধানের কোন ব্যবস্থা আমাদের স্পর্শ করে না। আর অনিরাপদ জীবন মানেই হত্যা, গুম, রাহাজানি, চিনতাই, হামলা, মামলা, হিংসা, বিদ্বেস আর দখল দারিত্বের মহাযজ্ঞ। আমরা এই মহাযজ্ঞ থেকে রেহাই পাওয়ার কোন সুযোগ দেখছি না। দেশপ্রেম এখন একটি হস্যকর শব্দে পরিণত হয়েছে। যারা দূর্নীতি বাজ, চাদাঁবাজ, সন্ত্রাস, খুনি তারাও বলে দেশপ্রেমিক আবার রাজাকার, আলবদর, আলশামস তারাও বলে দেশপ্রেমিক। যারা দেশকে ভারতের কলোনি হিসেবে গড়ে তুলেছে তারা নিজেকে ভাবে দেশপ্রেমিক আবার যারা আমিরিকা ও পাকিস্থানের কলোনিতে পরিণত করতে যাচ্ছে তারাও বলে দেশপ্রেমিক। এখন এই শব্দের ভাবার্থই পরিবর্তন হয়ে নিকৃষ্ট রুপে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন দেশপ্রেমিকে গিজ গিজ করছে। শেখ হাসিনার হাতে যে অপশাসন হয়েছে তার পরিসমাপ্তির জন্যই এই বিপ্লবের জন্ম কিন্তু আমরা দেখছি একটি অপশাসন থেকে মুক্তির সাথে সাথে আরেকটি দুঃশাসন চেপে বসেছে। আমরা এখন চব্বিশ ঘন্টা আতংকে থাকি। আমাদের মনে , মগজে, মননে, ভাবনায়, চিন্তায়, চেতনায় মহা আতংক বিরাজমান। এই আতংক আমাদের জীবনকে দুঃর্বিসহ করে তুলেছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অভিপ্রায়ে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা আর মিথ্যা অভিযোগ। বাংলাদেশে প্রয় তেত্রিশ শতাংস লোক সরাসরি আওয়ামী রাজনীতি সমর্থক। তাদের মাঝে বেশির ভাগ মানুষই সৎ সরল। অনিয়ম দূর্নীতি করেছে খুব কম পরিমান কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গণ হারে হাজার হাজার লোকের উপর মামলার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এধরনের হীন কাজ সরকারের অবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে একটি নতুন সমস্যায় পতিত করছে। সুশাসন নিশ্চিত কল্পে সুস্থ মস্তিষ্ক খুবই দরকার। বর্তমান সময় সরকার বা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যারা নিয়োগ প্রাপ্ত তাদের কেবিনেট পরিচালনায় দক্ষতার অভাব রয়েছে। আমরা মনে করছি দেশ কোন ডাকাতের হাত থেকে পাগলের হাতে পড়েছে। এখন আমরা সবাই পাগল প্রায়। সকলের পাগলামিতে মনে হচ্ছে এটা পাগলের মিলন মেলা। এই পাগলদের হাতে যদি রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি চলমান থাকে তবে খুব নিকট সময়ে দেউলিয়া হতে অপেক্ষা করতে হবে না। মানুষ অধিক জ্ঞানী হলে তার পরিচালনা ভারসাম্যহীনতায় পরার সম্ভাবনা থাকে।এখন দেশে অবস্থা দেখে তাই মনে হচ্ছে। নিয়ন্ত্রনহীন প্রশাসন ব্যবস্থাপনা, আমলাহীন পরিচালনা পর্ষদ, অনভিজ্ঞ কর্মীদের হাতে কার্যভার দেশের সার্বিক ব্যবস্থা খুবই জগন্য রুপ ধারন করছে। এ যেন অনিয়ন্ত্রীত ভারসাম্যহীন সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে আমাদের দেশ। আমরা যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে পাকিস্থানকে পরাজিত করতে পেরেছি তার অর্ধশত বছর পরেও প্রকৃত গণতন্ত্রের মুখ দেখতে পারিনি। আমরা পেয়েছি একটি হাজত খানা। আমাদের দেশ পুরুটাই একটি হাজত খানা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। আমাদের দেশে প্রকৃত অপরাধী ধরাছোয়াঁর বাইরে থাকে আর সাধারন মানুষ দিয়ে ভর্তি থাকে হাজত খানা। আমাদের মাঝে আমরা জাগিয়েছি কুসংস্কার, অমানবিকতা, মনুষ্যত্বহীনতা। আমরা সেজেছি বকধর্মিক। আমাদের স্বার্থের জ¦ালে আমরা দেশকে নিক্ষেপ করছি অসমতার মাঝে। আমরা আমাদের প্রয়োজনে অন্যের হক মেরেদিতে পারি আবার খর্ব করতে পারি অন্যের অধিকার। আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? আমাদের মাঝে কাজ করে অত্যাচারী মনোভাব সৃষ্টি করা, হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে আমাদের হাত কাপেঁনা। অন্যের সম্পদের প্রতি লোভ আজ ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন যেন আমাদের মাঝে নেই বললেই চলে। দেশের আনাচে কানাচে কিশোর গ্যাংদের উৎপাতে অতিষ্ঠ জনসমাজ। সাধারন মানুষ তার সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে মহা চিন্তায় দিন পার করছে। সমাজের সংগ নেওয়ার মতো মানুষ নেই, মনুষ্যত্ব নেই সবার মাঝে হিংসা বিদ্বেস আর নষ্ট মানষিকতার এক মহাসংকট। এই প্রতিহিংসা পরায়নতা আজ রাষ্ট্রের মূলনীতি। ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা তার ব্যত্যয় দেখিনি। আমরা যুগে যুগে নানান রুপি অত্যাচারীদের কবলে থেকে নিজেদের চেতনাহীন করে তুলেছি। আমাদের আবেগ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমরা মৃতপ্রায় । আমরা অনুভূতিহীন আজ আমাদের স্বাধীনতা বিরুধীদের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছে নীতি কথা। আজ আমরা তাদের দ্বারা শাসিত হওয়ার পর্যায়ে আছি। আমরা এই মঅর্ধমৃত মনে তাদের হীন আচরণে চিরমৃত্যুর পথে এগুচ্ছি। সার্বিক পরিস্থিতি আজ আমাদের প্রতিকুলে কারন আমাদের আত্মা আজ মৃত। পচন ধরেছে আমাদের মানষিকতাই। আমাদের আজ পরাধীনতার শিকলে বাধাঁ । আমাদের বাকশক্তি আজ নিয়ন্ত্রিত শাসকের হাতে। আমরা কী আমাদের অধিকারের কথা বলতে পারি? আমাদের সংবাদপত্র বা মিডিয়া কী সব সংবাদ প্রকাশ করতে পারে? আসলে এই প্রশ্ন আমি রাখছি আজ আপনাদের কাছে। চোখ খোলে দেখুন চারিদিকে মহাদুঃশাসন আজ বিচারহীনতায় কাদঁছে আমাদের সভ্যতা মনুষ্যত্ব আর মানবিকতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে নেই কোন পরিবেশ। পড়াশোনা নেই, গবেষনা নেই, শিক্ষক ছাত্রদের মধ্যে নেই সুসম্পর্ক। ছাত্ররা লঞ্চিত করছে তাদের শিক্ষককে এ যেন মহাপ্রলয়ের মুখে আমাদের বাংলাদেশ। জ্ঞান বিজ্ঞানের যুগে আজ ছাত্ররা শিক্ষা কাজ বাদ দিয়ে আন্দোলন আর রাজনীতির খেলায় মগ্ন। এ যেন অর্থ আয়ের সোনার পাখি। রাজনীতি আজ সেবা নয় হয়ে উঠেছে দাম্ভিকতা শিক্ষার মহাবিদ্যালয়। আমরা বিজ্ঞানমনষ্কতাকে এড়িয়ে চলি। সমাজের সকল বিপ্লবের মুলে আছে বিজ্ঞান। সেই বিজ্ঞান আর দর্শনকে অবজ্ঞা করে কখনো উন্নয়নের পথে হাঁটা সম্ভব নয়। আমরা অন্যের সৃষ্ট সকল কিছুকে ভোগ করার জন্য উদগ্রীভ থাকি কিন্তু নিজেরা কোন প্রকার গবেষনায় নামতে নারাজ। আমরা নিজেদের স্বকীয়তাকে ভুলে অন্যের আনুকুল্য লাভের আশায় ব্যাকুল থাকি। আমাদের এই মানষিকতা আমাদের পরাধীনতার বীজ বপনে সহায়তা করে। শান্ত সমাজকে আমরা স্বার্থের জন্য অস্থিতিশীল করে তুলি। আর সেই সুযোগে সার্বভৌমত্ম হারানোর পথে ধাবিত হচ্ছি। বিগত আওয়ামী সরকারের গণতন্ত্রের গলা কাটা স্বভাবের কারনে আমিরিকা আর পাকিস্থানের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যে অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়েছে তা কোন ভাল ফল বয়ে আনতে পারে না। এখানে আওয়ামী সরকারের অপশাসন থেকে যেমন মুক্তি দরকার ছিল তেমনি নতুন করে সার্বভৌমত্ম হারানোর আশংকা আমাদের ঘুম হারাম করে তুলেছে। আমরা এমন মুক্তি চাইনি যা আমাদের শান্তি বিনষ্ট হতে পারে। আমরা স্বকীয়তা চাই। স্বাধীনতা চাই গনতন্ত্রের মাধ্যমে। এই যে দুঃশাসনের এমন অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের মাঝে তৈরি হয়েছে তা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের মানুষ হতে হবে। আমাদের আকরে ধরতে হবে মনুষ্যত্বকে, নমনীয়তাকে। আমাদের চাওয়া খুব বেশি ছিলনা। আমরা একে অপরের ভালবাসা চেয়েছি, মানবিকতার বিকাশ চেয়েছি, মনুষ্যত্ব চেয়েছি, সুশাসন চেয়েছি, জবাবদিহিতা চেয়েছি আর চেয়েছি একটি সুশৃঙ্খল গণতন্ত্র। আমরা এর কিছুই পাইনি। আমরা পেয়েছি হিংসা, বিদ্বেস, রাহাজানি, অত্যাচার অবিচার আর বিশৃঙ্খলা। বাংলাদেশকে এতোদিন ভারতের কলোনি ভাবা হতো কিন্তু এখন তা আমিরিকার কলোনি হওয়ার পথে। আমরা এখন শাসিত হবো নষ্টদের দ্বারা। আমরা আজ হারাতে বসেছি স্বাধীনতা । বর্তমান সময়ে তমশাচ্ছন্ন একটি ঘোরে আমরা পতিত প্রায়। সরকার পতনের আন্দোলনের ধারাকে এমন ভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে যেন ১৯৭১ সালের ত্রিশ লক্ষ শদীদের জীবনকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃতির পায়তারা করা হচ্ছে। যে মানুষগুলো ১৯৫২ ভাষা আন্দোালনের বিরুধীতা করেছে আর ১৯৭১ এর স্বাধীনতা চায় নাই তারা আজ এই হীন আচরনে ইতিহাসের পাতা ছেড়ে ফেলার নগ্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। এদর দাতঁ ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার সময় এখন। বাংলাদেশের মানুষের একটি অংশ ভারতকে অপছন্দ করে থাকে। এই অপন্দের পেছনে দুটি প্রধান কারন জড়িত তা হলো পাকিস্থানকে দ্বিখন্ডিত করার জন্য ভারতের সমর্থন যা এদেশের রাজাকার আলবদর আলশামস ও জামায়াত ইসলামী সমর্থকগণ। অন্য একটি পক্ষ হলো বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। এই ভারত বিদ্বেসী মনোভাব বর্তমান সময়ে এমন প্রকট আকার ধারন করেছে যে ভারতকে সমর্থন দেওয়া তাদের চোখে দেশদ্রোহীতার সমান অপরাধ। এখন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে ভারত যেভাবে পাশে থেকে সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে এমন বৈরিসম্পর্কের মূল কারন কী? আওয়ামী সরকারের সাথে ভ্রাত্বিত্ব সম্পর্ক আর অন্য সকল সরকারের সাথে কুটনৈতিক বৈরীতাই বা কেন? ভারতের সমর্থন না পেলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো কিনা তার সন্দেহ ছিল। এটা মুলত রাজনৈতিক দ্বন্দ যা কোন কালেই সমাধান হয়নি। কুটনৈতিক সুসম্পর্ক সবসময় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিরাট ইতিবাচক প্রভাব রাখে। সেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই বললেই চলে। ভারত বাংলাদেশেকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে এখানে তার সাথে বৈরিতা মানে নদীতে বসবাস করে কুমীরের সাথে যুদ্ধ করার ঘোষনা দেওয়া। সংস্কৃতিতে বংলাদেশ ভারত সম্পর্কের ভিত্তি অনেক মজকুত। এখানে বৈরীতার মাধ্যমে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক স্থাপন অসম্ভব তাই সুন্দর সম্পর্কের মূলভিত্তি হলো সকল ক্ষেত্রে কুটনৈতিক গ্রহনযোগ্যতা সৃষ্টি করা। ভারতের সাথে কুটনৈতিক সুসম্পর্ক মানে এই নয় যে স্বকীয়তা বিিেকয়ে দিয়ে তাদেরকে প্রভু বানিয়ে নিতে হবে। তাদের প্রতি পূর্ণসম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পূর্বক রাজনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। লেখক: কথাসাহিত্যিক |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |