গণ অভ্যুত্থানে বিরোধিতার অভিযোগ, তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়লেন ইবি শিক্ষক
ইবি প্রতিনিধি:
|
জুলাই-আগস্টের গনহত্যায় জড়িতদের সমর্থন ও ছাত্র আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুলকে ক্যাম্পাস ছাড়া করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তিনি ক্যাম্পাসে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। জানা যায়, শনিবার সকাল ১০টার বাসে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তিনি তার বিভাগে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগটির সভাপতিসহ কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে তাকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন। বিভাগটির সভাপতিসহ কয়েকজন শিক্ষক তাকে নিরাপদে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেন। তিনি ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই মিছিল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, প্রতিশোধ ও চূড়ান্ত লড়াইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন ছাত্র উপদেষ্টা পদে থাকা এই অধ্যাপক।বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষার্থী গ্রেফতার হলে তাদের মুক্ত করতে ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা নেননি, উল্টো তাকে ফোন দিলে রিসিভ করেন নি। আন্দোলনের শুরু থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে লেখালেখি করতে থাকেন তিনি। শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কয়েকজন শিক্ষক মিছিলে অংশ নিলে তিনি তাদের উপর হামলার পরিকল্পনা করেন ও প্ররোচনা দেন। সংহতি জানানো শিক্ষকদের তালিকা করে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানোর কাজেও জড়িত ছিলেন তিনি। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অনেককে হুমকি ধামকি ও মাঝপথে কতিপয় শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে আন্দোলন স্থগিতের নাটম মঞ্চায়নে ভূমিকা পালন করেন বাকী বিল্লাহ বিকুল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে যারা নির্বিচারে গনহত্যা চালিয়ে ছিল তাদের সমর্থন করেছেন তিনি। বার বার তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। আমরা এমন কোন শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না যিনি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। যেখানে শত শত ছাত্রকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সেখানে যেসব শিক্ষক সমর্থন দিয়েছেন তাদের আমরা কোন ভাবেই শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করতে পারছি না। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, আমি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাওয়ার দাবি জানায়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি বের হয়ে যায়। এসময় তারা আমার সাথে কোন খারাপ আচরণ করেনি। তাদের সাথে আমি নিজেও কথা বলেছি। তবে আমার প্রশ্ন ক্যাম্পাসে এত আওয়ামীপন্থী শিক্ষক আছেন কিন্তু আমার সাথে বার বার এমন কেন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি ছাত্র উপদেষ্টা থাকাকালীন কখনো কোন ছাত্রের ক্ষতি করিনি। সব সময় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীরা হইতো ভুলের মধ্যে আছে। আমি আশা করি তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে। আমি সব সময় শিক্ষার্থীদের স্নেহের চোখে দেখি, তাদের অপর আমার কোন ক্ষোভ নেই। আমি সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম আর এখনো থাকব। ডেল্টা টাইমস/সিআর
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |