নির্বাচনী দ্বন্দ্বে চকরিয়ায় দুজনকে কুপিয়ে হত্যা
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
|
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তর মানিকপুর এলাকায় দুজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উত্তর মানিকপুর স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি। নিহত দুজন হলেন উত্তর মানিকপুর এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. সেলিম (৪৩) ও আবু সালামের ছেলে শফিউল আলম (৪৮)। নিহত শফিউল স্থানীয় গ্রাম-পুলিশ সদস্য। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. সেলিম। সেই নির্বাচনে সেলিম অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। তখন থেকে এলাকার নানা ইস্যুতে জাহেদ ও সেলিমের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। চকরিয়া থানার পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে মো. সেলিমকে কৌশলে বাড়ি থেকে উত্তর মানিকপুর স্টেশনে ডেকে নেন ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার। স্টেশনে গিয়ে একটি মুঠোফোনের দোকানে বসেন সেলিম। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য শফিউল আলম। এমন সময় জাহেদ সিকদারের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয়জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেলিমের ওপর হামলা করেন। হামলায় বাধা দিতে গেলে শফিউল আলমকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সেলিমকে মৃত ঘোষণা করেন। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় শফিউলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাত ১টার দিকে তিনিও মারা যান। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহেদ সিকদার ও সেলিমের বিরোধ অনেক পুরোনো। একক আধিপত্য ধরে রাখতে দুজনকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটল। এ বিষয়ে জানার জন্য ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, নিহত সেলিম ও শফিউল আলম স্থানীয় যুবলীগের নেতা আবু বক্কর হত্যা মামলার আসামি। এ ঘটনার জেরে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আধিপত্য নিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের সঙ্গে নিহত সেলিমের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরেও খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা না হলেও মূল ঘটনা উদ্ঘাটনে ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি আবু বক্করকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত আবু বক্করের স্ত্রী সোনিয়া আকতার। সেই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মো. সেলিম ও শফিউল আলম। ডেল্টা টাইমস্/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |