সোমবার ২৯ মে ২০২৩ ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক পরিণতির পটভূমিতে জি-৭ সম্মেলন
রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩, ২:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

.

.

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ও এশিয়ায় বাড়তে থাকা উত্তেজনার মতো সমস্যাগুলো মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনা করতে ১৯ মে জাপানের হিরোশিমায় মিলিত হচ্ছেন বিশ্বের ৭টি ধনী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতারা।উল্লেখ্য যে, এই ৭টি দেশ হচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্বীকৃত বিশ্বের ৭টি মূল উন্নত অর্থনীতির দেশ। চীনের অর্থনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্য নিয়ে এবারের জি-৭ সম্মেলন। জি-৭ এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হল গ্রুপ অফ সেভেন, বা সাতটি দেশের দল। বিশ্বের তথাকথিত উন্নত অর্থনীতির সাতটি বড় দেশ ও একটি সংস্থা নিয়ে এই জোট গঠিত। জোটের সদস্য দেশ হল কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই জোটের একটি অংশ। রাশিয়া ১৯৯৮ সালে এই জোটে যোগ দিলে সেটা জি-৮ হয়েছিল। তবে ক্রিমিয়া দখল করার কারণে ২০১৪ সালে রাশিয়া বাদ পড়ে যায়। চীন একটি বড় অর্থনীতি এবং বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হওয়া সত্ত্বেও তারা কখনও এই জোটের সদস্য ছিল না। কোন দেশে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম থাকলে ওই দেশকে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর মতো উন্নত অর্থনীতি হিসাবে দেখা হয় না। সারা বছর ধরে সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা বৈঠক করেন, চুক্তি করেন এবং বৈশ্বিক ইভেন্টগুলিতে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন। এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনের আগে, জি-৭ এর অর্থমন্ত্রীরা বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে বেশি বেশি কর আদায়ের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।প্রধান ইভেন্টে জি-৭ নেতারা দিনের সবচেয়ে বড় ইস্যুগুলো নিয়ে একসাথে আলোচনা করতে বসেন। এ বছর জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে আরও আটটি দেশ। ফলে বিশ্বের ১৫টি দেশ এই সম্মেলন অংশ নিচ্ছে। আয়োজক দেশ জাপান আমন্ত্রণ তালিকা আরও বড় করেছে। তিনি অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া,ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসেবে কোমোরোস এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ফোরামের প্রতিনিধি হিসেবে কুক দ্বীপপুঞ্জকে আমন্ত্রণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সম্মেলনের আয়োজক দেশ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার লক্ষ্য যুক্তফ্রন্ট গঠন। তবে সদস্য দেশের বাইরে আমন্ত্রণ পাওয়া অতিরিক্ত অতিথিরা সেই লক্ষ্য অর্জন আরও কঠিন করে তুলতে পারে। কারণ এসব অনেক দেশের সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। গত বছর জি-৭ ভুক্ত দেশ গুলির নেতারা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অবকাঠামোর অর্থায়ন এবং চীনের ট্রিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের মোকাবিলা করার জন্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এ পরিকল্পনার আওতায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামো তৈরির প্রকল্প চালুর জন্য ৫ বছরে ব্যক্তিগত এবং সরকারি তহবিলে ৬০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জি-৭ ভুক্ত নেতারা।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য জি-৭ ভুক্ত দেশের নেতারা সম্মেলনে গ্লোবাল অবকাঠামো এবং বিনিয়োগের জন্য অংশীদারিত্ব স্কিম পুনরায় চালু করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশ গুলির প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করার জন্য ৫ বছরের মধ্যে অনুদান, ফেডারেল তহবিল এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগে ২০০ বিলিয়ন সংগ্রহ করবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও ৩০০ বিলিয়ন ইউরোর ঘোষণা করেছে। বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল এবং অন্যান্য থেকে শত শত বিলিয়ন অতিরিক্ত ডলার আসতে পারে। এ অর্থ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার পাশাপাশি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত করতে সহায়তা করবে। এই পরিকল্পনা সবার জন্য রিটার্ন প্রদান করবে। তবে এটি সাহায্য বা দাতব্য কাজ নয়।এটি একটি বিনিয়োগ,যা প্রত্যেককে রিটার্ন প্রদান করবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন সম্মেলনে বলেছেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ স্কিমের একটি টেকসই বিকল্প গড়ে তোলার জন্য ইউরোপ একই সময়ের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করবে। জি-৭ এর শীর্ষস্থানীয় ৭ নেতা চীনকে দেশটিকে পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জি-৭ মিত্ররা রাশিয়ার ওয়ার মেশিন এবং মস্কোর লাভজনক হীরা বাণিজ্য এবং ইউক্রেন আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত আরও সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ধনী দেশ গুলোর সংগঠন জি-৭ এর নেতারা জাপানের হিরোশিমায় রাশিয়ার ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের হীরার মস্কোর বাৎসরিক বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক করছেন। ১৫ মাস আগে ইউক্রেনে ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের কারণে দেশটি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে, যা তার দেশকে মন্দার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এবং ক্রেমলিনকে যুদ্ধে নিঃশেষ করে দিয়েছে। জি-৭ এখন বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আরও শক্ত করে, ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে এবং আরও বেশি রাশিয়ান সংস্থা এবং তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের শাস্তিমূলক বিধি নিষেধের আওতায় আনতে চাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সপ্তাহান্তে ভার্চুয়ালি শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্বাগতিক জাপানের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেন। ওয়াশিংটন আজ দিনের প্রথম দিকে আরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জি-৭ ভূক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে গেছে। মার্কিন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশগুলো থেকে আরও ৭০টি সংস্থাকে মার্কিন কালো তালিকায় রাখা হবে। ওই কর্মকর্তা বলেন  ব্যক্তি, সংস্থা, জাহাজ এবং বিমানের বিরুদ্ধে ৩০০ টিরও বেশি নতুন নিষেধাজ্ঞা থাকবে। যেহেতু জি-৭ সমষ্টিগতভাবে রাশিয়ার হীরার বাণিজ্যকে বন্ধ করে, উচ্চ প্রযুক্তির ট্রেসিং পদ্ধতিসহ ব্রিটেন তার নিজস্ব রাশিয়ান হীরার উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। এদিকে লন্ডন বলেছে, তাদের অ্যালুমিনিয়াম, তামা এবং নিকেল আমদানির লক্ষ্য ছিল। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, আজকের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাগুলো জি-৭ রাশিয়ার হুমকির মুখে ঐক্যবদ্ধ এবং ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থনে অবিচল। আপাতত জি-৭ রাশিয়ান হীরা বাণিজ্যের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞার বন্ধ রাখতে পারে।

তবে কর্মকর্তাদের মতে, শীর্ষ সম্মেলন হীরার বাণিজ্য বন্ধ করার ইঙ্গিত দেবে। ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন, রাশিয়ান হীরা চিরদিনের জন্য নয়। আমরা রাশিয়ান হীরার বাণিজ্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করব। ইইউ সদস্য রাষ্ট্র বেলজিয়াম ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে রাশিয়ান হীরার বৃহত্তম পাইকারি বাজার রয়েছে। জি-৭ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বিভক্ত। রাশিয়ান অর্থনীতি ২০২২ সালে ২.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এই প্রবণতা এই বছরের শুরুতে অব্যাহত ছিল। কিন্তু মস্কো দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়েছে। চীনের মতো মিত্রদের কাছে বাণিজ্যকে সরিয়ে দিয়েছে এবং কিউবা, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো দীর্ঘ নিষেধাঞ্জার কবলে পড়া দেশগুলো থেকে ছল চাতুরির কৌশল ধার করেছে বলে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ২০২৩ সালে ০.৭ শতাংশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অনুমান করেছে। জি-৭ নেতারা ভারত ও ব্রাজিলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতেও এই শীর্ষ সম্মেলনকে ব্যবহার করছে। কারণ, এই দু'টি আঞ্চলিক শক্তি কখনো কখনো মস্কো বা চীনের সমালোচনা করতে অনিচ্ছুক। পারমাণবিক ধ্বংসস্তূপের শহরটি এখন শান্তিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৩ দিনের সম্মেলনে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্য নেতারা রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা করবেন। মাত্র কয়েকদিন আগেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ঝটিকা সফরে জি-৭ দেশ গুলোর বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন। সম্মেলনে তিনিও যোগ দিচ্ছেন, যার ফলে এ সম্মেলনে ইউরোপের যুদ্ধের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দেয়া হচ্ছে।দীর্ঘ শীতকালীন যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক পরিণতির পটভূমিতে শুরু জি-৭ সম্মেলনে আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার ১৫ মাসের সামরিক অভিযান। এদিকে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় জি-৭ নেতারা এশিয়ায় নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন, এবং তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নেতারা অন্য অনেক বিষয়ের পাশাপাশি বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রাধান্য নিয়ে ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন এবং আশঙ্কা করছেন, চীন বল প্রয়োগ করে তাইওয়ানের দখল নেয়ার চেষ্টা করবে। যার ফলে আরো বিস্তৃত আকারে সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। চীন এই স্বশাসিত দ্বীপকে নিজ ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবি করে এবং এর কাছাকাছি এলাকা গুলোয় নিয়মিত জাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠায়।হিরোশিমার সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা পারমাণবিক বিস্তারের ঝুঁকির প্রতি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, হিরোশিমা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হওয়া শহর। হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তনশীল রাজনীতিতে নিজেদের ক্রমহ্রাসমান প্রভাব নিয়ে দেশগুলো নিজেদের কৌশল পর্যালোচনা করবে। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ বিদ্যমান। তবে গত মার্চে নিজেদের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দুই বিরোধী পরস্পর বিরোধী আঞ্চলিক পরাশক্তির এই উদ্যোগের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরাশক্তির দেশগুলো মোটেও প্রস্তুত ছিল না। একইসাথে সম্প্রতি সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা করা হচ্ছে। সৌদির পাশাপাশি অন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও পশ্চিমা পরাশক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে সিরিয়ার সাথে নতুন করে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।

ইরানের নিউক্লিয়ার ইস্যু থেকে শুরু করে সৌদি-ইরান-রাশিয়ার চুক্তির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি বড় উত্থান দেখা যাচ্ছে। এমনকি ভূমিকম্পের পর সিরিয়া ইস্যুতেও মধ্যপ্রাচ্যে বিরাট পরিবর্তনও লক্ষ্য করা হচ্ছে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

এমনকি পশ্চিমা নির্ভরতা কমিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সাথে বহুমাত্রিক সম্পর্ক উন্নয়নের কথা ভাবছে সৌদি। ফ্রান্সের কূটনৈতিক বলেন, জি-৭ জোটের দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবশ্যই কাজ করে যাবে। আর এর সাথে শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তাই নয় বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তাও জড়িত। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর বিতর্কিত নীতির কারণেই আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে তাদের সম্পর্কের মাত্রা নিয়ে নতুন করে ভাবছে। একই সাথে অ-পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদারে উদার নীতি গ্রহণ করে সেই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। জি-৭ জোটের আরেক কূটনৈতিক বলেন, ইরান-সৌদি-চীনের মধ্যকার চুক্তি আমাদের মাথাব্যাথার কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউই ভাবতেই পারেনি এমন কিছু হবে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের আবারও একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে জি-৭ জোটের দেশগুলোর নতুন করে ভাবতে হবে। ওপেকের তেলের দাম নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে যেয়ে সৌদি আরবের কার্যক্রম এক্ষেত্রে আরেকটি বার্তা। অন্যদিকে জাপানের হিরোশিমায় ১৯ মে'র জি-৭ জোটের পক্ষ থেকে সামিট আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ের ঐ সামিটে উত্তর কোরিয়া, ইরান ও রাশিয়ার পারমাণবিকঅস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সামিটে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ, রাশিয়ার প্রতি নিষেধাজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক পরাশক্তি গুলোর বর্তমান চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হবে। বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে কাজ করতে পারলেই জি-৭ জোটের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকবে।


লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।


ডেল্টা টাইমস্/রায়হান আহমেদ তপাদার/সিআর/এমই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com