হাসিনার সময় শেষ তাই ১০ কি.মি. মেট্রোরেল উদ্বোধন: দুদু
নিজস্ব প্রতিবেদক:
|
মেট্রোরেলের রাস্তা হচ্ছে ৫১ কিলোমিটার। ৫১ কিলোমিটার শেষ করার সময় প্রধানমন্ত্রী কাছে নাই এইজন্য তাড়াহুড়া করে ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার মেট্রোরেল উদ্বোধন করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন'এর আয়োজনে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মাওলানা শাহ্ মোঃ নেছারুল হকসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুদু বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি বুঝতে পেরেছেন আর সময় বেশি নাই আপনাকে চলে যেতে হবে। ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে। আজ আপনি মেট্রোরেল উদ্বোধন করছেন। যে মেট্রোরেলের রাস্তা হচ্ছে ৫১ কিলোমিটার। একান্ন কিলোমিটার এর কাজ শেষ করার পরে আপনি উদ্বোধন করবেন এটাই ছিল স্বাভাবিক কিন্তু ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার হওয়ার পরে আপনি উদ্বোধন করছেন। তাহলে কি আমরা বুঝে নেব ৫১ কিলোমিটার এর কাজ শেষ করার সময় আপনার নাই। এইজন্য কি তাড়াহুড়া করে মেট্রোরেল উদ্বোধন করছেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনি জোর করে হোক ভোট চুরি করে হোক তিনবারে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। আপনার তো এই বোধয় আছে যে মানুষ এখন কত নিগৃহীত। আপনার বিরুদ্ধে আপনার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে দেশের মানুষের কি অবস্থা হয়েছে এটা তো আপনি বুঝতে পারেন। নাকি আমাদেরকে আপনাকে বুঝিয়ে বলতে হবে? ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আমরা দশ তারিখে দশ দফা উত্থাপন করেছি। সেই দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে। রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ টি পয়েন্টের কথা বলেছি সেগুলো বাস্তবায়ন করব। আমরা ২৪ তারিখে প্রোগ্রাম করতে চেয়েছিলাম আপনাদের অনুরোধে ৩০ তারিখ করেছি। এরই মধ্য আপনারা নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে একজন শহীদ হয়েছে। এইভাবে আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। এটা মুক্তিযুদ্ধের জাতি। তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী খুব শক্তিশালী ছিল তারা কিন্তু টিকতে পারে নাই। জনগণের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন বিদ্রোহ করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। একাত্তরের দিকে তাকালে পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। যত অন্যায়কারী জুলুমবাজ গত দুশো বছরে বাঙ্গালীদের উত্ত্যক্ত করেছে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারে নাই।এখনো সময় আছে গণতন্ত্র ফেরত দেন, পদত্যাগ করুন তা না হলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনাকে বিদায় করা হবে । সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, পাকিস্তান আমলে যখনই গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে তখনই অত্যাচার করেছে তারা। শেখ সাহেব ৭০ এর নির্বাচনে জয়লাভ করার পরে তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। যার কারণে পাকিস্তান ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা বাঙ্গালীদের দোষ না। এটা পাকিস্তানিদের দোষ। এখনো যদি গণতন্ত্র ফেরত দেওয়া না হয়। স্বাধীনতা ফেরত দেওয়া না হয়। আন্দোলনের গর্জনে আপনাকে (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। কৃষক দলের সাবেক এই আহবায়ক বলেন, আর ৩-৪ দিন পরে নতুন বছর আসছে আমি নিশ্চিত নতুন বছর হবে নতুন সরকারের বিজয় বার্তা। আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নাই এই অবদারিত বিজয়কে কেউ বাধা দেয়। তিনি বলেন, এই সরকারের ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নাই, চাকুরি দেওয়ার ক্ষমতা নাই, কিল দেওয়ার গোসাই। এই সরকারের লোকজন সব ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা বানিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ এ সরকারের বিপক্ষে। আমেরিকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বিপক্ষে। কোন দেশের রাষ্ট্রদূত কারো বাড়িতে গেলে অপমান অপদস্থ হতে হয়। এ কেমন দেশে বাস করছি আমরা। সরকারের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন, তারেক রহমানকে দেশে আনার ব্যবস্থা করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস সহ রাজবন্দীদের মুক্তি দেন। যদি মুক্তি না দেন তাহলে আমরা জেল গেট ভেঙে বের করে নিয়ে আসব। যেভাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্থানের জেলখানা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলাম সেইভাবে রাজবন্দীদের বের করে নিয়ে আনবো। নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি আর বলেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে পরে প্রায় ৪৫০ নেতাকর্মীকে আটক রেখেছে। আমরা তাদের মুক্তি দাবি করছি। আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার রোশনালে আটক আছে।আমরা তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।সারাদেশের প্রায় ১ লক্ষ বিএনপি নেতা কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। আমরা আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফর জামান বাবর সহ যাদেরকে মিথ্যা মামলার নামে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে আমরা এইসব ফরমায়েসি রায় প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। শেখ হাসিনা আপনার সময় খুব বেশি নাই পদত্যাগ করুন । সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, পিরোজপুর জেলা বিএনপি'র আহ্বায় অধ্যাপক আলমগীর হোসেন,বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তামান্না,জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহসভাপতি আসাদুর রহমান খান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম সহ প্রমুখ। ডেল্টা টাইমস্/মাহবুব আলম/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |