বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘পুলিশ দিয়ে ছাত্রদের আন্দোলন দমন কাঙ্ক্ষিত নয়’
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
প্রকাশ: শনিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:১৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পুলিশ ডেকে এনে যে কাণ্ড ঘটানো হলো সেটা কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই অধিকার থাকলেও সেটা এত তাড়াতাড়ি প্রয়োগ করা ঠিক হয়নি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি মেনেও আন্দোলন থামানো যেতো। তবে উপাচার্যের পদত্যাগকেই তিনি সমাধান দেখছেন না। তার মতে, এক আরেক উপাচার্য এলেও একই ধরনের সমস্যা হতে পারে।

জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই শিক্ষাবিদ এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে আইসিটি ভবনে অবরোধ করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডেকে আনে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকসহ অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ উপাচার্যকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর উদ্ধার করে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে, ল-এনফোর্সমেন্ট দিয়ে, মামলা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় না৷ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরেকটু দক্ষতার সাথে হ্যান্ডেল করলে বোধ হয় এই সমস্যা হতো না৷ কিছুটা ছাড় দিয়ে ছাত্রদের যৌক্তিক কিছু দাবি দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিতে পারত৷ সেটা হলেও এতদূর গড়াতো না৷'

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে ছাত্রদেরও অসহিষ্ণুতা আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও অসহিষ্ণুতা আছে৷ যদি অসন্তোষ দেখা দেয়, বিশেষ করে লোকাল ইস্যু নিয়ে৷ হল ইস্যু, অ্যাডমনিস্ট্রেশন, পরীক্ষা ও ক্লাস সংক্রান্ত- এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরেকটু দক্ষতার সাথে হ্যান্ডেল করলে বোধ হয় এই সমস্যা হতো না৷ কিছুটা ছাড় দিয়ে তাদের যৌক্তিক কিছু দাবি দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিলে এতদূর গড়াতো না৷’
ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ‘ছাত্রদেরও কিছু অসহিষ্ণুতা আছে৷ তাদের দাবি-দাওয়ার পেছনে যদি যুক্তি থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চয়ই মেনে নেবে৷ সেটার জন্য আমি জানি না কেন তারা বিস্ফোরন্মুখ পরিস্থিতির সৃষ্টি করলো৷ ছাত্ররা সবাই রাস্তায় নামলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তেমন কোনো ক্ষমতা থাকে না৷ সেই অবস্থায় হয়তো তারা পুলিশের সাহায্য চেয়েছে৷ এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি পুলিশকে ইনভাইট করে তাহলে তারা তো একশন নিতেই পারে৷ তবে এটা আরও পরে করা যেত৷’

আপনি নিজেও তো উপাচার্য ছিলেন৷ কখনো এই ধরনের সমস্যা পুলিশ ডেকে সমাধান করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য বলেন, ‘না আমি এটা করিনি৷ আমি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে ডেকেছি৷ প্রভোস্ট, হাউসটিউটর, শিক্ষক সমিতি, সিনেট মেম্বারদের ডেকেছি৷ সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেছি৷ কখনো কখনো সিনেট, সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে ছাত্রদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেওয়া ভালো৷ তারা অনেক সময় অনেক ভলো কথা বলে৷ যৌক্তিক কথা বলে৷ সেগুলো শোনা উচিত৷’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের বিয়ে হয় না৷ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এই বক্তব্যকে আপনি কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানতাম শাহজালালের ভিসি একজন গুড একাডেমিশিয়ান, রিসার্চার৷ শিক্ষক সমিতিসহ নানা বডির নেতৃত্বে ছিলেন৷ আমার তো মনে হয় এইসব বিষয় তার জানা উচিত, বোঝা উচিত৷ তবে ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়৷ নতুন আরেকজন ভিসি আসলে তারও পদত্যাগের দাবি উঠতে পারে৷’

ইউজিসির কোনো রোল প্লে করার সুযোগ আছে কী না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সুযোগ আছে৷ তারা একটি কমিটি করে এটা দেখতে পারে৷ সেখানে ইউজিসির প্রতিনিধিরা থাকলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও থাকলেন৷’


ডেল্টা টাইমস্/সিআর/জেড এইচ

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com