কর্মক্ষেত্রে যদি সফল হতে চাই
রূপম চক্রবর্ত্তী:
|
![]() কর্মক্ষেত্রে যদি সফল হতে চাই কেউ সরকারী চাকুরী করছেন আবার কেউ প্রাইভেট চাকুরী করছেন। যে চিন্তা চেতনা নিয়ে আমরা চাকুরীতে প্রবেশ করি অনেক সময় দেখা যায় সেই চেতনার প্রতিফলন হচ্ছেনা। অনেক মানুষ ইচ্ছা শক্তির দারুণ প্রতিফলন ঘটিয়ে তার কর্মজীবনে সফলতা এনেছেন। কিছু কিছু অভিভাবকরা মনে করেন শুধু হাতেগোনা কয়েকটি বিষয়ে পড়ালেখা করলেই ভালো ক্যারিয়ার গড়া যায়। এর মধ্যে বাবা-মা’র প্রথম পছন্দ ছেলে বা মেয়েকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবে। কেউ চিন্তা করে সামরিক বাহিনীর অফিসার বানাবে। কেউবা আবার চিন্তা করে সন্তান বড় হলে ডাক্তার হবে। অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের এমন গড়ে তোলা যাতে তারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে না পারলেও অন্তত যে চাকুরীতে প্রবেশ করবেন সেই চাকুরীর সবার সাথে মিশতে পারে। সন্তানদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। যারা লেখাপড়া করছেন তাদের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা চেতনা থাকতে হবে। অভিনেত্রী কেলেসি ওকাফর বলছেন, "আমার স্থির বিশ্বাস, আপনাকে আসলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি নিজের জীবন বা সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কেমন মনোভাব পোষণ করেন। চাকুরীর সাথে পরিশ্রমের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পরিশ্রমের অন্ত রাখেন না অনেকে। তবুও যেন কিছুতেই কিছু হয় না। ক্রমাগত যেন সাফল্যের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন মনে হয়। আর সাফল্য ধরা না দিলে কাজের গতিও কমতে থাকে। ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে হতাশা। এই সময় মোটিভেশনাল স্কিলস অনেক গুর্রুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোন কাজে ব্যর্থ হলে ভাববেন না আপনার জীবন শেষ। এখন বা এই মুহূর্তে হয়নি বা হওয়ার সম্ভাবনা নেই এমন কিছু ভাবার দরকার নাই। আমরা অনেক সময় মা বাবা, ভাই বোন, আত্মীয় স্বজন , অফিস কলিগ, বস এর মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে থাকি কখনো টিচার, মেন্টর এর মাধ্যমে। যেটাই হউক না কেন আপনার নিজের ভিতরের কিছু করার অদম্য ইচ্ছাটা ও আপনাকে প্রতিদিন অনুপ্রাণিত করতে পারে শত প্রতিকূলতার মাঝেও লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য। আমরা অনেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি। ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ থেকে এসে আমরা এক জায়গায় মিলিত হয় চাকুরী করার জন্য। প্রত্যেক মানুষের রুচি আলাদা, চিন্তাভাবনা আলাদা। ভিন্ন মতের মানুষগুলোকে একসাথে কাজ করতে হয় নিজেদের প্রতিষ্ঠানে। কর্মজীবিদের মধ্যে কেউ বেশি দৌড়াতে পারে, আবার কেউ কম দৌড়াতে পারে। দ্রুত আর ধীরগতির কর্মজীবি থাকবেই। একজন কর্মজীবি মানুষ বেশিরভাগ সময় সহকর্মীদের সাথেই কাজ করে। তাই সহকর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা খুব বেশি প্রয়োজন। তাই একজন আরেকজনের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। আমরা কাজের বিনিময়ে প্রাপ্তির আশা রাখি। যারা কাজ করি তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ আসনে যাওয়ার জন্য একটা সুপ্ত প্রতিযোগিতা থাকে। অফিসিয়াল কাজ অথবা কারখানার কাজ যেকোনো কিছুতে প্রেষণা এবং নান্দনিক কাজের পরিবেশ থাকলে কর্মচারীরা কাজ করার অনুপ্রেরণা পায়। মালিকপক্ষ এবং সহকর্মীদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সুন্দর একটি কর্মস্থল সৃষ্টি হয়। কিন্তু বিশেষ সময়ে দেখা যায় একজন সহকর্মী আরেকজন সহকর্মীর নামে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে নিজের চেয়ার ঠিক রাখার চেষ্টা করেন। এই ধরণের মন মানসিকতার লোকগুলো প্রতিষ্ঠানে বেশি কাজ করতে পারেননা। কেননা বেশিরভাগ মানুষ তাকে অপছন্দ করেন। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকুক কিন্তু কাউকে অশ্রদ্ধা করে নয়। নির্দোষ সহকর্মীকে দোষী বানিয়ে যদি আমি প্রতিষ্ঠানের উচু আসনে যেতে চাই তাহলে একসময় আমিও সেই অবস্থায় পতিত হব। দক্ষতার অর্থ নিপুন ভাবে কাজ করা। আর কর্ম তৎপরতা মানে সঠিক কাজটি করে ফেলা। দুটির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকলে তবেই যে আদর্শ পরিস্থিতি তৈরী হবে, সেটা তৎপর হওয়া বেশি শ্রেয়। একজন ব্যক্তি কেমন সেটা স্থির করে তার দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যক্তিত্ব, অনুপ্রেরণা এবং কাজ করার ক্ষমতা। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ফলও হয় ইতিবাচক। উৎসাহ এবং আগ্রহ তৈরী করে আপনি অপরকে এমন ভাবে বদলে দিতে পারেন, যখন তারা নিজেরাই নিজেদের অন্তর থেকেই এই প্রেরণা পাবে। দৃষ্টিভঙ্গি এমন একটি মনভাব তৈরী করে, যার ফলে আমাদের কাজে আগ্রহ বাড়ে। এটা ছাড়া কোনো কিছুতেই সফল হওয়া যায় না। বিপণন গুরু বলে পরিচিত মেরি পোরটাস বলেন, কারো চারপাশে যদি ইতিবাচক মানুষ সব সময় থাকে, তাহলে নিজের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা কিংবা ব্যর্থতা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকার কথা নয় তার। কাজের জায়গায় কর্মতৎপর হয়ে উঠতে হলে অপরকে এই ভাবে জাগানোর কৌশলও শিখে রাখতে হবে। লেখক: সনাতন ধর্মীয় বক্তা, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |